২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া : পর্বসংখ্যা-২২, বিজ্ঞান

-

সুনির্মল চন্দ্র বসু, সহকারী অধ্যাপক, সরকারি মুজিব কলেজ, কাদেরনগর, সখীপুর, টাঙ্গাইল
সুপ্রিয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের বিজ্ঞান বিষয়ের ‘চতুর্থ অধ্যায় : উদ্ভিদে বংশ বৃদ্ধি’ থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রিমি তার মামারবাড়ি বেড়াতে গিয়ে সরিষা ক্ষেত দেখে মামাকে জিজ্ঞেস করল, এগুলো কী ফুল। মামা বলল, সরিষা ফুল। রিমি ফুলগুলোতে নানা রকম কীটপতঙ্গের ঘুরে বেড়ানো দেখে মামার কাছে কীটপতঙ্গের ঘুরে বেড়ানোর কারণ জানতে চাইল, মামা বলল, মধু খেতে ও সুন্দর রঙের আকর্ষণে কীটপতঙ্গ ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়।
ক. পরাগায়ন কাকে বলে? ১
খ. ফুলে বৃতির প্রয়োজন কেন? ২
গ. রিমির দেখা ফুলের অভিযোজন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ফল ও বীজ উৎপাদনে রিমির দেখা প্রক্রিয়াটির গুরুত্ব তুলে ধরো। ৪
উত্তর : ক. ফুলের পরাগধানী থেকে পরাগরেণুর একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে।
খ. ফুলের সর্ববাহিরের স্তবককে বৃতি বলে। বৃতি ফুলের অন্য অংশগুলোকে কুঁড়ি অবস্থায় রোদ, বৃষ্টি ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে।
গ. রিমির দেখা ফুলটি হলো সরিষা ফুল। পরাগায়নের মাধ্যমগুলোর সাহায্য পেতে ফুলের গঠনে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। একে অভিযোজন বলে। সরিষা ফুল হলো- পতঙ্গপরাগী ফুলের অভিযোজন। এদের ফুল বড়, রঙিন, মধুগ্রন্থিযুক্ত। পরাগরেণু ও গর্ভমুণ্ড আঁঠালো ও সুগন্ধযুক্ত।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রিমির দেখা প্রক্রিয়াটি হলো পরাগায়ন প্রক্রিয়া। ফল ও বীজ উৎপাদনে পরাগায়ন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলো- পরাগায়নের ফলে পরাগরেণু গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়। এখান থেকে নিঃসৃত রস শুষে নিয়ে এটি ফুলে ওঠে এবং এ আবরণ ভেদ করে একটি নালী বেরিয়ে আসে। এটিকে পরাগনালী বলে। পরাগনালী গর্ভদণ্ড ভেদ করে গর্ভাশয়ে ডিম্বকের কাছে গিয়ে পৌঁছে। ইতোমধ্যে এ পরাগনালীতে দু’টি পুং গ্যামেট সৃষ্টি হয়। ডিম্বকের ভেতরে পৌঁছে এ নালিকা ফেটে যায় এবং পুং গ্যামেট দু’টি মুক্ত হয়। ডিম্বকের ভেতর ভ্রƒণথলি থাকে। এর মধ্যে স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়। পুং গ্যামেটের একটি স্ত্রী গ্যামেটের সাথে মিলিত হয়। এভাবে নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়।
নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া গর্ভাশয়ে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে তার কারণে ধীরে ধীরে গর্ভাশয়টি ফলে পরিণত হয়। এ ডিম্বকগুলো বীজে রূপান্তরিত হয়। নিষিক্তকরণের পর গর্ভাশয় এককভাবে অথবা ফুলের অন্যান্য অংশসহ পরিপুষ্ট হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে তাকে ফল বলে। উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ফল ও বীজ উৎপন্নের ক্ষেত্রে পরাগায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


আরো সংবাদ



premium cement